ডেস্ক নিউজ : রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদের বিরুদ্ধে এনআরবি ব্যাংকের উত্তরা শাখা থেকে ভুয়া এফডিআর দেখিয়ে ঋণের আড়াই কোটি হাতিয়ে নেওয়ার প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
শিগগিরই এ বিষয়ে মামলা হবে। ইতিমধ্যে অনুসন্ধান প্রতিবেদন কমিশনে জমা দিয়ে মামলার অনুমতি চাওয়া হয়েছে বলে দুদকের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে নিশ্চিত করেছেন।
দুদক সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে রিজেন্ট হাসপাতালের যন্ত্রাংশ কেনার নামে এনআরবি ব্যাংকের উত্তরা শাখা থেকে দুই কোটি টাকা ঋণ নেন। যা সুদে-আসলে আড়াই কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। তৎকালীন সময় নিজের প্রভাব খাটিয়ে দেড় কোটি টাকার ভুয়া এফডিআর দেখিয়ে ২ কোটি টাকা ঋণ নেন সাহেদ।
দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এনআরবি ব্যাংক থেকে আগে ঋণের টাকা উত্তোলন হয়। পরে এফডিআরের ভুয়া কাগজপত্র জমা দেন সাহেদ। এসব ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সাহেদ যেসব কাগজপত্র জমা দিয়েছেন সবই ছিল ভুয়া। এমনকি নিজের এনআইডি কার্ড জালিয়াতি করে ভুয়া কার্ড জমা দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের একজন পরিচালক বলেন, সাহেদের বিরুদ্ধে মামলারর জন্য সব তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। কমিশনের অনুমতি পেলে মামলা দু-একদিনের মধ্যে হতে পারে।
সূত্র আরও জানায়, ঋণ আদায়ে এনআরবি ব্যাংকের পক্ষ থেকে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও সাহেদ কোনও অর্থ পরিশোধ করেননি। উল্টো চেক নিয়ে প্রতারণা করেন। সাহেদের দেওয়া চেক ডিসঅনার হয়। এনআরবি ব্যাংক ২০১৮ সালে ঋণের টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে অর্থঋণ আদালতে মামলাও করেছিল। এছাড়া তার জামানত চেক ডিজঅনার হওয়ায় রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে এন আই অ্যাক্টের অধীনেও মামলা হয় আদালতে।
এদিকের, সাহেদের অনিয়ম ও দুর্নীতি অনুসন্ধানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশে ব্যাংক, যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের দপ্তর, উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের উত্তরা শাখার ব্যবস্থাপক, মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের বিমানবন্দর শাখা ব্যবস্থাপক, জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ও এনবিআরসহ ৯ প্রতিষ্ঠানে নথিপত্র তলব করেছে দুদক। দুদক পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
১৩ জুলাই সাহেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করে দুদক। উপ-পরিচালক মো. আবু বকর সিদ্দিকের নেতৃত্বে টিমের অন্য দুই সদস্য হলেন—সহকারী পরিচালক মো. নেয়ামুল হাসান গাজী ও শেখ মো. গোলাম মাওলা।
প্রসঙ্গত, টাকার বিনিময়ে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা, মনগড়া রিপোর্ট দেওয়া ও রোগীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের মতো ঘটনায় গত ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায় র্যাব। রিজেন্ট হাসপাতালের দুটি শাখা সিলগালা করার পর ৭ জুলাই র্যাব-১ বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করে। মামলার প্রধান আসামি সাহেদ।
র্যাবের বিশেষ অভিযানে বুধবার ভোর ৫টা ১০ মিনিটে সাতক্ষীরার সীমান্ত এলাকা থেকে অবৈধ অস্ত্রসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।